সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৬

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন মানে বাস্তব জীবনের অতি বাস্তবতার সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করা।




জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন মানে বাস্তব জীবনের অতি বাস্তবতার সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু ভাল মানের শিক্ষা পায়।
একাডেমিক দিক দিয়ে এরা ভাল মানের শিক্ষা পায় মানে এখানকার অধিকাংক টীচারই প্রতিভাবান ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ।শুধু শিক্ষার মানের দিকটাই ভাল আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বলতে যেটা বোঝায় সেটার বাকীদিকগুলো এখানে এতটাই উপেক্ষিত যে এখানকার শিক্ষার্থীরা শুধুই নিজেদের কষ্টগুলোকে সহে যায় চাপা কান্না আর বুকফাটা নি:শব্দ আর্তনাদের অন্তরালে।শুধু শিক্ষার্থী না এখানকার শ্রদ্ধেয় টীচাররাও উপেক্ষিত তাঁদের উচ্চতর গবেষণা ও অন্যান্য সুবিধা থেকে।এখানকার অনেক টীচার আছেন যারা স্টুডেন্টদের মত কষ্টকর জীবন যাপন করেন। সামাজিক মর্যাদার কারণে তাঁরা এসব বিষয়ে কথা বলতে পারেন না, তাঁদের নিয়ে কেউ কথাও বলে না লজ্জায়।

সরটুডেন্টদের দুর্ভোগের কথা বর্ণনা শুধু লিখে প্রকাশ করা সম্ভব না।অনেক বাস্তব সত্য থাকে যেগুলো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।জবিতে কোন স্টুডেন্ট ভর্তি হবার প্রাথমিক দিকে কয়েকটা মাস ভালভাবে চলতে পারলেও বিপত্তি বাধে এক সেমিস্টার না পেরোতেই।বিপত্তির কারণটা খুবই স্বাভাবিক।এখানে যেসব স্টুডেন্ট আসে তারা দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মেধাবী আর প্রতিভাবান শিক্ষার্থী যারা অধিকাংশই মধ্যবিত্ত আর নিন্মমধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান।দেশের রাজধানী শহরে একমাত্র অনাবাসিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লিভিং কস্ট এতটাই বেশী যে, একজন মধ্যবিত্ত পিতার ক্ষেত্রে তাঁর সন্তানের লেখাপড়ার খরচ যোগানোটা সত্যিই দূরহ ব্যাপার।শুরু হয় জীবনের চরম বাস্তবতার লড়াই।

অনেক ছাত্রের পরিচয় জানি যারা জীবনে আত্নহত্যা পর্যন্ত করতে গিয়েছেন অসংখ্যবার এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে।এখানকার স্টুডেন্টদের জীবনের নিরাপত্তা তার নিজের কাছেই।কারণটা খুবই স্বাভাবিক, কোন আবাসিক হল নাই এই প্রতিষ্ঠানের।গ্রাম গঞ্জের মেধাবী স্টুডেন্টগুলো কোন রকম টিউশিনি করে তাদের খরচ চালায়। বেশীরভাগ স্টুডেন্ট থাকে মেসে কিংবা হোস্টেলে, যেখানে নিরাপত্তার বংশ বালাই নেই।আর কয়েকমাস পরপর বাসা পাল্টানোর ঝামেলা যে কতটা বিরক্তিকর সেটা এখানকার স্টুডেন্টদের থেকে কেউ বেশী বুঝবে না।ক্যাম্পাসের বর্ণনা দিতে গেলে নিজেদের গরীবনা নিজেরা প্রকাশ করাটা বড়ই বেমানান দেখাবে।

শুধুই এটা বলা যেতে পারে এখানে শুধু ক্লাস পরীক্ষা আর রেজাল্টের জন্য বেশীরভাগ স্টুডেন্ট যাতায়াত করে।এখানকার উন্নয়নের চিত্র আফ্রিকার দুর্ভিক্ষ কবলিত দেশগুলোর উন্নয়নের থেকেও মন্থর গতির।এখানে শুধু মাঝেমধ্যে উন্নয়নের বাতাসের মৃদু আভাস পাওয়া যায়, যে মৃদু বাতাসে গাছের পাতাও নড়ে না, মাঝেমধ্যে এই মৃদু বাতাসে থাকে বিষাক্ত গ্যাস আর দুর্গন্ধ।

এতসব বাধাবিপত্তি পেরিয়ে এখানকার স্টুডেন্টদের মধ্যে রয়েছে অন্য রকম বন্ধন।ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এদের আগ্রহ আর অংশগ্রহণ দেশের অন্য যে কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে চোখে পড়ার মত।যে কোন অনুষ্ঠানে জবি যেন হয়ে উঠে এক ভালবাসার মিলনমেলার অপরুপ ক্ষেত্র।

দেশের নবীন এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জীবনযুদ্ধ জয় করে অবদান রাখছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে।কিন্তু আফসোসের বিষয় এই পোড়াকপালদের দিকে ফিরে তাকাবার কেউ নেই.....!!!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন